অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ (তিন শূন্য) তত্ত্ব সারা পৃথিবীতে পরিচিত হলেও তার শাসনামলে এর উল্টো ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
তিনি বলেন, ‘গত ১০ মাসে লক্ষাধিক বেকারত্ব বেড়েছে শুধু কারখানা বন্ধ করার কারণে আর দারিদ্র্য বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ লাখ। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তিনি থাকা অবস্থায় তার থ্রি জিরো তত্ত্বের যে উল্টো যাত্রাটা ঘটল, এটা তো তার একটু খেয়াল করা দরকার। এতে তো আমরা খুশি না।
আমরা তো চাই যে থ্রি জিরো তত্ত্বটাই অগ্রসর হোক।’
গতকাল সোমবার এক গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দিয়ে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘এই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশের একটা স্বপ্ন বা প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল। বৈষম্যের জায়গাগুলোকে অ্যাড্রেস না করে কি গণতন্ত্রের পথে যাওয়া সম্ভব? বৈষম্যহীন পথে যাওয়ার পথ ও পদ্ধতির সঙ্গে একমত হয়ে যারা কাজ করতে চেষ্টা করবে, তারাই হচ্ছে গণতান্ত্রিক শক্তি।’
দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু পরিবর্তনের চিন্তা আনা দরকার জানিয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর কী ধরনের বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত, কী কী শর্ত তাদের পূরণ করা উচিত। এটা নিয়ে কথা বলা দরকার এবং সমাজে এর পক্ষে একটা জনমত দাঁড় করানো দরকার।
তিনি আরো বলেন, ‘কেউ যদি বলে এখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ যারা, তাদের শাসনই চলবে, তাকে কি গণতান্ত্রিক শক্তি বলা যাবে? তাহলে বৈষম্যবাদী এবং বৈষম্যহীন রাজনীতি বা মতাদর্শ নিয়ে যারা কাজ করে, এ দুই পক্ষের মধ্যে জাতীয় ঐক্য কীভাবে সম্ভব? তাদের নিয়ে গণতন্ত্রের পথে আপনি কিভাবে যাবেন? দুজন দুই দিকে যাচ্ছে। এখানে তো বড় ধরনের একটা মৌলিক পার্থক্য।
আমাদের যেটা চেষ্টা থাকতে হবে, গণতান্ত্রিক শক্তির সম্প্রসারণ।’
আশির দশকে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আনু মুহাম্মদ বলেন, সেই লড়াইয়ের মধ্যে যে ঐক্যবদ্ধ সংঘটিত শক্তি তৈরি হয়েছিল, সেটা পরবর্তীকালে কিন্তু আর থাকেনি। ৯০ সালে নির্বাচিত সরকার আসার পর এই সংগঠিত শক্তির মধ্যে একটা বড় ধরনের ভাঙন তৈরি হলো। এই ভাঙনটা এত বহুধা ভাগে বিভক্ত হয়েছে যে সংগঠিত শক্তির উল্টো যাত্রা হয়েছে।